সব বই-ই আসলে একধরনের জেলখানা। সাধারণ জেলখানায় যেমন লোহার দন্ডের পেছনে আসামিদের বন্দি করে রাখা হয়, তেমনি বইখানার শব্দের পেছনে বন্দি করা হয়; এক নতুন জগত- যেখানে হাতিরা উড়ে, রাজকুমারেরা ঘুমন্ত রাজকন্যাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং মহাজাগতিক প্রাণিরা পৃথিবী দখলের জন্য উঠেপড়ে লাগে। এমন এক জগত, যেখানে “বাস্তবতা” পোস্টকার্ড হাতে নিয়ে কোনো দারোয়ান দাঁড়িয়ে থাকে না। মায়া ও বিস্ময়ের অদ্ভুত সুন্দর এই শব্দ জগতের প্রবেশাধিকার থেকে আমাদের দরিদ্র শিশু কিশোররা বঞ্চিত হবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে “প্রচেষ্টা” শুরু করেছে “বিনা মুল্যে আনন্দ বিতরণ কর্মসূচী”। যার অংশ হিসেবে প্রচেষ্টা বই বিতরণ করছে অভাবী শিশুকিশোরদের মাঝে।
কোভিড -১৯ এর বিস্তার মহামারীতে পরিণত হওয়ার সাথে সাথে সারা বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মার্চের মাঝামাঝি বন্ধ হয়ে যায়। এক-দু'মাস পরে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করে এবং শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট এর সাহায্যে ক্লাস করার জন্য স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের ব্যবহার শুরু করে। তবে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই স্বচ্ছল পরিবারের নয়। মফস্বল শহর ও গ্রামে অবস্থিত প্রচেষ্টার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মাধ্যম হিসাবে ব্যবহারের উপযুক্ত ডিভাইস না থাকায় এই ক্লাসগুলিতে অংশ নিতে পারেনি। প্রচেষ্টা এরকম ৪ জন শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দিয়েছে স্মার্টফোন যার সাহায্যে তারা এখন তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছে। প্রচেষ্টার অধীনে থাকা শিক্ষার্থীরা যাতে এই দুঃসময়ে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা পায় সেটাও নিশ্চিত করা হয়েছে মাসিক বৃত্তির মাধ্যমে।