শিক্ষা অন্যতম মৌলিক অধিকার। সাংস্কৃতিকভাবে গড়ে উঠার জন্য শিক্ষা প্রয়োজন। তাই প্রত্যেক শিশুর জন্য শিক্ষা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা যদি পুরো সমাজের দিকে নজর দেই তাহলে কি চোখে পড়ে? আমরা দেখতে পাই সারা দেশজুড়ে একটি বিশাল জনসংখ্যা অর্ধশিক্ষিত বা কোনো স্বাক্ষরজ্ঞান নেই। গ্রাম এবং শহর উভয় স্থানেই পথশিশুদের দেখা যায় যাদের অধিকাংশই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। তাদের আর্থিক আস্বচ্ছলতা, সচেতনতার অভাব, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অভাব এর জন্য দায়ি এবং তাদের শিক্ষার আলোতে নিয়ে আসা জরুরি। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার হার অনেক বেশি। এমনকি যে জেলাগুলোতে শিক্ষার হার বেশি সেখানেও ৬-১০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার প্রায় ১৫%। ধারণা করা হয়, প্রায় ৪০ লক্ষ শিশু ঝড়ে পড়েছে এবং ৬-১০ বছর বয়সী প্রায় ২ লক্ষ শিশু স্কুলে যায় না। এদের মধ্যে অধিকাংশ কখনোই স্কুলে যায় নি, আবার অনেকে ভর্তি হওয়ার পরে কিছুদিন গিয়ে আর যায় নি (UNICEF-2015)। ২০১৫ সালে ২২,৭২,২৮৮ জন শিক্ষার্থী জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো এবং ২০,৮২,০০০ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে ও ১,৭৪,২০০৭ জন অকৃতকার্য হয়েছে। এছাড়াও ১০০০০০ শিক্ষার্থী রেজিট্রেশন করার পরেও পরীক্ষায় অংশ নেয় নি। একই বছরে জেএসসি এবং জেডিসি সম্পন্ন করার আগে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২,৭৫,০০০। ইউনিসেফের প্রতিবেদন হতে জানা যায়, শহর থেকে গ্রামে ঝড়ে পড়ার হার বেশি এবং এটার অনুপাত ১৬:১১। এই সমস্যা অতিক্রম করতে হলে গ্রামের শিক্ষার্থীদের উপর বেশি নজর দিতে হবে। ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের খোঁজ করলে দেখা যায় অধিকাংশই মেধাবী শিক্ষার্থী এবং তারা প্রধানত ২টি কারণে পড়া বাদ দিয়েছেঃ
প্রচেষ্টা মনে করে সেই সকল দরিদ্র কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীরা সমগ্র দেশের প্রতিচ্ছবি বদলে দিতে পারে। যদি তারা শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে তবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবে। শুধু একটু সহযোগিতা পুরো সমাজ কাঠামো পরিবর্তন করতে পারে। এই বিশ্বাস ধারণ করে প্রচেষ্টা এই দুটো কারণ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সেই সকল শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত মানসিক সহায়তা এবং দিকনির্দেশনা দিতে চাই। আমরা চাই একাডেমিক ফলাফল ও বিভাগ, ইচ্ছা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে তারা নিজেদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিজেরাই তৈরি করুক। এটার পরে আমরা তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার খরচ বহন করি। শুধু আর্থিক এবং মানসিক সহায়তা প্রদানই নয়, একাডেমিক ক্ষেত্রে তারা উন্নতি করছে কিনা এবং কি ধরনের সমস্যা রয়েছে সেগুলোর উপরেও নজর রাখার মাধ্যমে তাদের মেধাকে উতকর্ষিত করতে চাই। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আমরা নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করি যাতে করে তারা নিজেদের উপর আস্থা স্থাপন করতে পারে।